এক রূপকথার অধ্যায়ের আড়ম্বরহীন পরিসমাপ্তি।

তিনি ঝড়ের মতো দাপুটে , আবার তিনি বরফের চেয়েও ঠান্ডা। নিজের ইচ্ছে কে প্রাধান্য দিয়েছেন সব সময়, শুনেছেন মনের কথা আবার কঠিন পরিস্থিতিতে ঠান্ডা মাথায় নিয়েছেন সব সিদ্ধান্ত। দেশ কে পড়িয়েছেন মুকুট , ২২ গজে উড়িয়েছেন ধুলো , প্রতিপক্ষের রাতের ঘুম উড়েছে , ১৩০ কোটি কে রাত জাগিয়ে স্বপ্ন দেখিয়েছেন —-এক রূপকথার অধ্যায়ের আড়ম্বরহীন পরিসমাপ্তি।আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন “ক্যাপ্টেন কুল “।

শনিবার আচমকাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির। অবসরের সময় নিজেই বেছে নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ব্যাট-প্যাড তুলে রাখলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। ইনস্টাগ্রামে পোস্ট দিয়ে আচমকাই তিনি জানিয়ে দিলেন যে আর নীল জার্সি তে দেশের হয়ে উইকেটের পেছনে তাকে দেখা যাবে না ।স্লগ ওভারে যখন রান রেট চরম হাই তখন ঠান্ডা মাথায় মাঠে নেমে আর তিনি হেলিকপ্টার শর্ট মারবেন না। ভক্ত, সমর্থকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ধোনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘‘সারা জীবন ধরে আপনাদের ভালবাসা এবং সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ। আজকের এই ৭টা ২৯ মিনিট থেকে আমাকে প্রাক্তন বলে ধরে নিতে পারেন!’’

ধোনির অকস্মাৎ অবসরের থেকে তাঁর সময় নিয়ে এখন চর্চা চলছে বেশি। অনেকেই বলছেন, গত বছরের ৯ জুলাই ঠিক এই সময়ই ভারত বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিল। প্রায় হারতে বসা একটা ম্যাচে জীবন এনে দিয়েছিলেন ধোনি। তিনি আর রবীন্দ্র জাদেজা লড়াইয়ে ফিরিয়ে এনেছিলেন ভারতকে। শেষমেশ মার্টিন গাপ্তিলের রকেট থ্রো ধোনির উইকেট ভেঙে দেয়। শেষ হয়ে যায় স্বপ্ন। দুনিয়ার সেরা ফিনিশার ফিরে যাওয়ার পরে ভারতের পক্ষে ম্যাচ বের করা আর সম্ভব হয়নি। ভারত যখন মেগা টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যায়, তখন ভারতীয় সময় নাকি ছিল ৭টা ২৯। ঘটনাক্রমে সেটাই ছিল ধোনির শেষ ম্যাচ। সেটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই ধোনি নাকি ৭টা ২৯ মিনিটকে বেছে নেন অবসরের সময় হিসাবে। মতামত আরো রয়েছে , চর্চায় ভালো খারাপ স্মৃতি কিন্তু ক্রিকেট ইতিহাসে ধোনি যে এক স্বতন্ত্র অধ্যায় রচনা করে গেলেন তা সর্বসম্মত ক্রমে স্বীকার্য। আর তাই রূপকথার রাজপুত্র মাহি, যেভাবে ঝাড়খণ্ডের স্টেশন থেকে ভারতীয় ক্রিকেটের ২২ গজ পর্যন্ত তার সফর সম্পূর্ণ করলেন তাকে কুর্নিশ যাচ্ছে বিশ্ব ক্রিকেট। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের এই সান্ধ্য কালেও যেন নিজের স্টাইলে সবাই কে বলে গেলেন “Thats the way ‘মাহি’ ve ” ।