‘করোনায় দায়ী’ চিনকে ‘জব্দ’ করতে করতে ১৮ দফা প্রস্তাব আমেরিকার

১৬ মে, করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের জন্য চিনকে কাঠগড়ায় তুলতে কোমড় বেঁধে নেমেছে আমেরিকা। সূত্রের খবর, চিনকে কোনঠাসা করতে এর জন্য অন্যান্য দেশের সঙ্গে কূটনৈতির বোঝাপড়ার রাস্তাতেও হাঁটতে পারে আমেরিকা।করোনাভাইরাস সংক্রান্ত মিথ্যা, প্রতারণা এবং ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে চিন থেকে কারখানা সরিয়ে নেওয়ার দাবি উঠেছে মার্কিন মুলুকে। অন্যদিকে ভারত, ভিয়েতনাম এবং তাইওয়ানের সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক আরও মজবুত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

করোনা মহামারীর জন্য চিনকে দায়ী করতে ১৮ টি পয়েন্ট-সহ পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন এক উচ্চপদস্থ সেনেটর থম তিলিস। তিনি বলেন, ‘চিনা সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে (করোনা) ধামাচাপা দিয়ে রেখেছিল এবং বিশ্বে মহামারী তৈরি করে এত আমেরিকানদের জীবনে দুর্দশা নিয়ে এসেছে। এটা সেই শাসনকাল, যে আমলে নিজেদের নাগরিকদের শ্রম ক্যাম্পে বন্দি করে রাখা হয়, আমেরিকার প্রযুক্তি এবং চাকরি চুরি করে নেওয়া হয় এবং আমাদের বন্ধু (রাষ্ট্রগুলির) সার্বভৌমত্বের প্রতি ভীতিপ্রদর্শন করা হয়।’

চিনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে বর্তমানে বেশ কিছু কূটনৈতিক কৌশল নিতে চলেছে আমেরিকা। সূত্রের খবর এই প্রস্তাবে, চিন থেকে একাধিক জিনিসের উত্পাদন কেন্দ্র সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভারত, ভিয়েতনাম এবং তাইওয়ানকে সঙ্গে আমেরিকার সামরিক-কৌশলগত সম্পর্কও আরও করার কথাো বলা রয়েছে।

সেনেটর থম তিলিস বলেন, চিনা সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে বিশ্ব-অতিমারীকে ঢাকার চেষ্টা চালিয়েছে। তিলিসের পেশ করা প্রস্তাবে বলা হয়েছে :-

১।প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামরিক শক্তিবৃদ্ধি করতে অবিলম্বে ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করতে।

২।ভারত, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামকে অত্যাধুনিক সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি বৃদ্ধি করতে।

৩।জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াকে তাদের সামরিক শক্তি বৃ্দ্ধিতে সাহায্য করতে। বিশেষকরে আমেরিকার আক্রমণাত্মক সামরিক সরঞ্জাম কেনার প্রস্তাব দিতে।

৪।চিনের ওপর সরবরাহ নির্ভরতা ধীরে ধীরে একেবারে সরিয়ে ফেলতে। উৎপাদনকে চিন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ফিরিয়ে আনতে।

৫।একইসঙ্গে, চিনাদের মানবাধিকারের লঙ্ঘনের তথ্যপ্রমাণ সকলের সামনে তুলে ধরা হোক। এক্ষেত্রেও চিনের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব।

৬।প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে বেজিংয়ে অনুষ্ঠিত হতে চলা শীতকালীন অলিম্পিক্স থেকে নাম প্রত্যাহার করুক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

৭।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেই চিনের আত্মপ্রচার বন্ধ করতে হবে। চিনা সরকার পরিচালিত সংবাদমাধ্যমকে অপপ্রচার হিসেবে গণ্য ও ঘোষণা করতে হবে।

৮।চিন যাতে মার্কিন প্রযুক্তি চুরি না করতে পারে, তার জন্য মার্কিন সংস্থাগুলিকে বিশেষ ইনসেন্টিভ দিতে।

৯।চিনা হ্যাকারদের বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তাকে আরও জোরদার করতে।

১০।আমেরিকার করদাতাদের টাকা দিয়ে চিনারা যাতে নিজেদের ঋণশোধ না করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে।

১১।চিনা প্রযুক্তি সংস্থাকে নিষিদ্ধ করতে। একইভাবে, অন্য মিত্র রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে কথা বলতে, যাতে তারাও একই পদক্ষেপগ্রহণ করে।

১২।কোভিড-১৯ নিয়ে মিথ্য কথা বলার জন্য চিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হোক।