কি এই করোনা ভাইরাস? কিভাবে এই ভাইরাস ঠেকানো যেতে পারে?

১ ফেব্রুয়ারী, রহস্যময় করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে চিনে। ২৫ শে জানুয়ারি পর্যন্ত ২১ জনের এই ভাইরাসের জেরে মৃত্যু হয়েছে।এরপরই দেশের পাঁচ জায়গায় কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে চীন সরকার।ওই ৫ শহরে কোনো বিমান ওঠা-নামা করবে না।খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোনোতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।প্রাণঘাতী এই ভাইরাস এখনও পর্যন্ত ১৭ টা দেশ ছড়িয়ে পড়েছে।এমনকি ভারতেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়েছে।স্বাস্থ দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে কারোর কোরোনাভাইরাস ধরা পরে দ্রুত খবর দিতে হবে তাঁদের।

কি এই করোনা ভাইরাস?

করোনাভাইরাস এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস – যা এর আগে কখনো মানুষের মধ্যে ছড়ায়নি।এই ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯-এনসিওভি।করোনাভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ছয়টি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। তবে নতুন ধরণের ভাইরাসের কারণে সেই সংখ্যা এখন থেকে হবে সাতটি।বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর মাংস থেকে এসব ভাইরাসের বিস্তার ঘটে থাকে।চীনের মানুষ প্রথম থেকেই বিভিন্ন প্রাণীর মাংস খেতে খুবই পছন্দ করেন, জানা গিয়েছে চিনবাসী মোট ১১০ টি জাতির মাংস খেয়ে থাকে।চীনের উহায়ের দক্ষিণ সমুদ্রের খাবারের পাইকারি বাজারের সি ফুড ও মাছ মাংস থেকেই এই করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে।জানা গেছে, এই বাজারে বহু ধরণের বন্যা প্রাণীর মাংস বেআইনি ভাবে বিক্রি হত।ইতিমধ্যে প্রায় ১৯০০ মানুষের মধ্যে এই ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে যা আমাদের কাছে খুবই আতঙ্কের বিষয়।

রোগটি কতটা মারাত্মক আমাদের জন্য?

ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত ৪১জন মারা গেছে বলে জানা যাচ্ছে। রোগের প্রকোপের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কম বলে মনে হলেও, এই পরিসংখ্যান নির্ভরযোগ্য নয়।কিন্তু যেহেতু সংক্রমণ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বেশ খানিকটা সময় লাগে, ফলে আরো অনেক রোগী মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।এমনকি রোগে আক্রান্ত কিন্তু হাসপাতালে আসেনি এমন খবরও পাওয়া গেছে।

প্রথমে কি লক্ষ দেখা দিতে পারে?

এই ভাইরাসের প্রথম লক্ষ জ্বর।প্রায় এক সপ্তাহ পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে হালকা ঠাণ্ডা লাগা থেকে শুরু করে মৃত্যুর সব উপসর্গ দেখা দিতে পারে।শুকনো কাশিও হতে দেখা দিতে পারে। সোয়াইন ফ্লু এবং ইবোলার সময় যা করেছিল ঠিক সেরকম আবার বিশ্ব জুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারির কথা ভাবছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

ভাইরাসটি কিভাবে ঠেকানো যেতে পারে?

এই ভাইরাস নিজে ধ্বংস হবেনা।শুধুমাত্র চীনের কর্তৃপক্ষের নেওয়া পদক্ষেপই এই মহামারীর অবসান ঘটাতে পারে।এখনও পর্যন্ত ভাইরাস প্রতিরোধক করতে কোন ভ্যাকসিন বা টিকা এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।

এই রোগ থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় হল- অন্যদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ হতে না দেওয়া, অর্থাৎ

১।মানুষজনের চলাচল সীমিত করে দেওয়া।

২।খাওয়ার আগে সর্বদা হাত ধোওয়ার জন্য সকলকে উৎসাহিত করা।

৩।স্বাস্থ্যকর্মীরা সর্বদা প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পড়েই রোগীদের চিকিৎসা করবে।

সন্দেহ হলে নিশ্চিত করার জন্য রোগীদের মধ্যে ভাইরাস রয়েছে কিনা তা জানতে এবং রোগীদের সংস্পর্শে আসা লোকদের সনাক্ত করার জন্যও গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড বা নজরদারি ব্যবস্থার প্রয়োজন।