ক্যারাটের ময়দান থেকে কুরিয়ার ডেলিভারি গার্ল , জীবন যুদ্ধে রায়গঞ্জের মেয়ে

নিজস্ব সংবাদদাতা, উত্তর দিনাজপুর:- জেলাস্তরের বিভিন্ন ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় একের পর এক প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাস্ত করে মেডেল-সার্টিফিকেট , ইতিমধ্যেই ব্ল্যাক বেল্ট অর্জন করেছে সে । ক্যারাটে নিয়ে কেরিয়ার গড়ার দিকে এগোচ্ছিল স্বপ্ন ভরা দুটো চোখ কিন্তু, লকডাউনে জীবনটাই ওলট-পালট হয়ে গেছে তার। নাম স্মৃতিকণা কুণ্ডু, বাড়ি রায়গঞ্জের।পরিবারের হাল ধরতে সদ্য আঠারোর গণ্ডি পার করা মেয়েটি বেছে নিয়েছে কুরিয়ার ডেলিভারি গার্লের কাজ ৷ ছোটোবেলাতেই বাবা-মাকে আলাদা হয়ে যেতে দেখেছে স্মৃতিকণা । পরিবার ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি ছোটো থেকেই তাঁকে মানসিকভাবে শক্ত করে তুলেছিল ৷পাশাপাশি পছন্দের খেলা হিসেবে ক্যারাটেকেই বেছে নিয়েছিল সে ।


২০১২ সালে ক্যারাটে জীবনের শুরু ৷ পরের বছরই জেলাস্তরের ক্যারাটে চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম স্থান অধিকার ৷ এরপর জেলাস্তরের বিভিন্ন ক্যারাটে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে পালকে যুক্ত হতে থাকে একের পর এক মুকুট ৷২০১৫ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত অর্জন ব্লু বেল্ট, ব্রাউন বেল্ট ও ব্ল্যাক বেল্ট ৷ ২০১৮ সালে মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোনোর পর রায়গঞ্জের পলিটেকনিক কলেজে ভরতি হয় স্মৃতিকণা ৷ এদিকে অনলাইনে শাড়ির ব্যবসা শুরু করেন স্মৃতিকণার মা । আয় ভালোই হচ্ছিল । কিন্তু বাধ সাধল লকডাউন । আচমকা বন্ধ হয়ে গেল শাড়ির ব্যবসা । ঘরে তখন নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা । বড় মেয়ে হিসেবে পরিবারের হাল ধরতে তাই পথে নামতে হয় স্মৃতিকণাকে ৷ একটি ক্যুরিয়ার সংস্থায় কাজ নেয় সে। পড়াশোনা বন্ধ আর জীবনের প্রথম প্রেম ক্যারাটেও , স্মৃতিকণার বাস্তব জীবনে এখন শুধুই স্মৃতি ৷ সারাদিনের খাটাখাটনির পর ক্যারাটে নিয়ে এগোনোর কথা ভাবাটা এখন তার কাছে বিলাসিতা ৷ তবে ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে ক্যারাটে নিয়ে ফের ভাবা শুরু করবেন, জানিয়েছেন স্মৃতিকণা।