ক্রমশই বাড়ছে ফাইবার গ্লাসের তৈরি দুর্গা মূর্তির চাহিদা

পুজো আর মাত্র কয়েক দিন বাঁকি। ( significantly ) রাজ্য জুড়ে এখন সাজো সাজো রব। আকাশে-বাতাশে ভরে ওঠেছে পুজো পুজো গন্ধ। কিন্তু কালের নিয়মে প্রতিমা তৈরিতেও নানা বদল এসেছে। চাহিদা আর প্রত্যাশায় ভর দিয়ে আধুনিক হয়েছে পটুয়াপাড়াও। একসময় ছিল টেরাকোটার কাজ, পাথর খোদাই করে মূর্তি বানানো, পরবর্তীতে সিমেন্ট প্লাস্টার অফ প্যারিস, চিনামাটি নানা ধরনের উপাদানে তৈরি মূর্তি স্বভাবত বিভিন্ন মন্দির প্রাঙ্গণে, পার্ক গির্জা এমন কি বসতবাড়ীতেও। মাটির তৈরি প্রতিমা পূজিত হত সর্বোত্র তবে পাথরের দেবদেবী আজও দেখা যায় বিভিন্ন পুরনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে ।

 

ক্লাব বারোয়ারি বা বাড়ির পুজো অর্চনায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে মাটির তৈরি প্রতিমা।  ( significantly ) কিন্তু প্রতিবছর ব্যয়বহুল প্রতিমা ক্রয় এবং বহন করে নিয়ে যাওয়ার অসুবিধা জনিত কারণে বর্তমানে বাজারে এসেছে গ্লাস ফাইবার। একটু দাম বেশি পড়লেও এই উপাদানে তৈরি মূর্তি এবং ধর্মীয় বা সামাজিক পরিবেশে সাজানোর নানান বিষয় গুলি তৈরি হচ্ছে। বছরের-পর-বছর উজ্জলতা একি থাকা এবং সহজেই ভাঙ্গে না, এমন হওয়ার কারণে ক্রমশ ঝোক বাড়ছে মানুষের।

 

চাহিদা আর প্রত্যাশায় ভর দিয়ে আধুনিক হয়েছে পটুয়াপাড়াও। ভিনদেশে পাড়ি দেয় কুমোরটুলিতে তৈরি হওয়া প্রতিমা। কিন্তু মাটি নয়, বিভিন্ন কারণে বর্তমানে ফাইবার গ্লাসের তৈরি প্রতিমাই পাঠানো হচ্ছে বিদেশে। যে কাজ মৃৎশিল্পীদের কাছে আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। মৃন্ময়ী মা কীভাবে চিন্ময়ী হয়ে ওঠে, কুমোরটুলিতে ঘোরাঘুরি করলে তা অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে যায়। সেখানে সবই ফাইবার গ্লাসের এক চালা প্রতিমা। কোনওটির উচ্চতা সাত ফুট তো আবার কোনওটি পাঁচ ফুট উচ্চতার বাক্সে বন্দি। লন্ডন, নেদারল্যান্ডস থেকে মার্কিন মুলুক- সর্বত্রই  ফাইবার গ্লাসের প্রতিমা। দীর্ঘ লকডাউনে মৃৎশিল্পীদের অবস্থা ছিলঝ করুন! তবে বিকল্প কাজের প্রতি যাদের ঝোঁক ছিল তারা খুব বেশি সমস্যায় পড়েননি, ঘরে বসেই বিভিন্ন মডেল, মুনি ঋষির মূর্তি তৈরি করে রেখেছিলেন যা ক্রমশ স্বাভাবিক হয়ে আসা বর্তমান পরিস্থিতিতে বিক্রি করে কিছু উপার্জন করতে পারছেন।

আর ও  পড়ুন    গ্রেফতার হলেন অখিলেশ যাদব, কেন?

সখা সখি দেবদেবীর মূর্তি, উদ্যানের পশুপাখি সিংহদরজার সিংহ মন্দিরের মোটা থাম , আরো কত কি! “মাটির প্রতিমার মতোই প্রথমে খড় বেঁধে তাতে এঁটেল মাটির প্রলেপ দিয়ে একটা কাঠামো তৈরি করতে হয়। এরপর সেটিকে প্লাস্টারের ডাইস করা হয়। এবার সেটির আলাদা আলাদা টুকরো করতে হয়। মানে হাত, পা, দেহ, গলা, হাতের তালু ইত্যাদি। একটি প্রতিমার ক্ষেত্রে প্রায় ৭০-৮০টি টুকরো তৈরি করতে হয়। ফাইবার তৈরির পর আবার ঘষা-মাজা করে সেই টুকরোগুলিকে একটা একটা করে জুড়ে তা প্রাইপার পুটিং করতে হয়। তারপর ফিনিশিং করতে হয়।” তবে শুধু ফাইবারের ক্ষেত্রেই নয়, ব্রোঞ্জের মূর্তি তৈরির আগেও প্রাথমিক পদ্ধতি একইরকম হয়ে থাকে। এবার আসা যাক রঙের বিষয়টিতে। এক্ষেত্রেও মাটির প্রতিমার তুলনায় প্রক্রিয়া আলাদা। বাড়ির দেওয়ালে যে রং করা হয়, সেই অয়েল কালারই ব্যবহৃত হয় প্রতিমার কাঠামোয়।উপার্জনের তাগিদে যাঁরা দেশের বাইরে থাকতে হয়, তাঁদের কাছেও কুমোরটুলি থেকে পৌঁছে যায় মা। উৎসবে মেতে ওঠেন প্রবাসীরাও।