জেলার ঐতিহাসিক কিছু বনেদি বাড়ির পুজোর রোমহর্ষক ইতিহাস

জেলার

জেলার ঐতিহাসিক কিছু বনেদি বাড়ির পুজোর রোমহর্ষক ইতিহাস। আমাদের রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় জেলায় এমন অনেক বনেদী বাড়ির নানা ঐতিহাসিক ঘটনা সমৃদ্ধ পুজো নিয়ে এই প্রতিবেদন।

 

বাঁকুড়ার সাহারজোড়া গ্রামে ‘দুর্গা’ 

আজ থেকে আনুমানিক ৬০০-৭০০ বছর পূর্বের ঘটনা। কথিত আছে বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া ব্লকের সাহারজোড়া গ্রামের এক প্রত্যন্ত চাষী একদা নিজের জমিতে নাঙ্গল দিয়ে চাষাবাদ করছিলেন। ঠিক তখনই নাঙ্গলের ফলে মাটির তলা থেকে একটি শিলা পাথর বেরিয়ে আসে। নাঙ্গলের আঘাতে শিলা পাথরের গা দিয়ে বেরিয়ে আসছিল রক্ত। তৎকালীন মল্ল রাজা ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন এবং সেই দিনে দুপুরবেলায় রাজাকে স্বপ্নাদেশে মা মহামায়া তার প্রস্তরখন্ডকে পুজো দিতে বলেন। শুরু হয় সাহারজোড়া গ্রামে আদ্যা শক্তি মা মহামায়ার পুজো।

 

আসানসোলের ধাদকা গ্রামের পুজো

পুজোর বয়স তিনশো বছর। পুজোর প্রতিমা একচালার। শাল কাঠের একটি পাটাতনের ওপরেই প্রতিমা তৈরি করা হয়।  পুজোর চারদিন গ্রামজুড়েই নিরামিষ খাওয়া হয়। দশমীর পর আমিষ খাওয়ার প্রচলন আছে গ্রামে।পুজো ঘিরে উত্‍সবের ছোঁয়া লাগে রুখাশুকা ধাদকা গ্রামে।

 

আর ও  পড়ুন     ভারতীয় বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন ডেঙ্গুর ওষুধ, কবে এটি পাওয়া যাবে

 

বনগাঁর বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুজো 

বনগাঁর ছয়ঘড়িয়ার প্রাচীন পুজো হল প্রখ্যাত ঐতিহাসিক রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামা বাড়ির পুজো।  পুজোর সূচনা করেন গৌড়হরি ব্যানার্জি। এখানে প্রতিমা দুহাতে অসুর বধ করছেন। বাকি হাতগুলো ছোট ছোট। তাই প্রতিমা এখানে বিড়ালহাতি দুর্গা নামেই জনপ্রিয়। অবিভক্ত বাংলার যশোর জেলার ছয়ঘড়িয়ায় শুরু হয় পুজো। পুজোর বয়স প্রায় সাড়ে তিনশো বছর

 

বর্ধমানের ঘোষাল বাড়ির পুজো

কোলসাড়া ঘোষাল বাড়ির পুজোর বয়সও প্রায় চারশো ছুইছুই। ঘোষাল পরিবারের এগারো তম বংশধর দিগম্বর ঘোষাল ছিলেন সম্রাট শেরশাহের বিশ্বস্ত কর্মচারি।  কথিত আছে স্বপ্নাদেশেই ঘোষাল পরিবারে শুরু হয় দুর্গাপুজো। একচালার প্রতিমাতে শুরু হয় মুর্তি গড়ার কাজ। নদিন ধরে চলে দুর্গাপুজো। দশমীতে কুমারী পুজোর প্রচলন আছে ঘোষাল বাড়িতে। প্রতিপদ থেকে ভোগ অন্ন তৈরি করা হয়।

 

আমাদপুরের চৌধুরী বাড়ির পুজো

আমাদপুরের চৌধুরী বাড়ির পুজোর বয়স প্রায় সাড়ে তিনশো বছর। পুজোর সূচনা করেন অনাদিরাম সেন। ওরঙ্গজেবের আমলে মুর্শিদাবাদে জমিদারি পেয়েছিলেন অনাদিরাম সেন। বর্গি হামলায় মুর্শিদাবাদ থেকে চৌধুরী পরিবার চলে আসেন বর্ধমানের আমাদপুর গ্রামে। পুজোর পনেরো দিন আগে থেকেই বোধনের চন্ডীপাঠ শুরু হয় এ বাড়িতে। পুজোর আগে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংগ্রহ করা হয় চাল-ডাল। সেই চাল ও ডাল বেটে আল্পনা দেওয়া হয় মন্দির প্রাঙ্গনে।