থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুকে রক্ত দিয়ে বাঁচালেন ১২ ক্লাসের ছাত্রী ‘প্রিয়াঙ্কা’

নিজস্ব সংবাদদাতা, পূর্ব বর্ধমান, ১৩ মে, আইন মেনে শুধু নাবালিকা সহপাঠিদের শুধু বিয়ে আটকানো নয়, থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত মুহুর্ষ চিকিৎসাধীন শিশুকে বিরল গ্রুপে রক্ত দিয়ে প্রাণ বাঁচিয়ে আরোও এক ধাপ এগিয়ে গেলো পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাদলা গার্লস উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ ক্লাসের ছাত্রী তথা কন্যাশ্রী প্রিয়াঙ্কা কুন্ডু।,এই ছাত্রীর সাহসিকতায় এক অভিনব নজির গড়লো। কালনা মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে প্রিয়াঙ্কা ব্লাড দেয়।তাকে ফুলের তোরা দিয়ে সম্মান জানায় হাসপাতাল সুপার।

স্কুলের কন্যাশ্রীরা সহপাঠীদের সাথে নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে আটকানোর ঘটনায় পূর্ব বর্ধমানের কালনায় নতুন কিছু নয়।নাবালিকাদের বিয়ে আটকে তাদের ফের পড়াশুনা জগতে ফিরিয়েছে এই ছাত্রীরা।এবার আরও এক ধাপ এগোলো। বেশ কয়েক বছর ধরেই পূর্ব বর্ধমানের কালনার পূর্বস্থলীর বরগাছি গ্রামের ৯ বছর ৫ মাসের এক শিশুর থ্যালাসিমিয়া আক্রান্তে ভুগছে। গত মাসে আক্রান্ত এই শিশুর শরীরে বিরল রক্তের প্রয়োজনে হিমশিম খেতে হয়েছিল তার বাবা ও পরিজনদের। বিরল রক্তের গ্রুপ তাই অমিল কালনা মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে, অন্যদিকে লকডাউনের জেরে কালনা মহকুমা জুড়ে ব্লাড ক্যাম্প না হওয়ায় রক্তের সংকটে ভুগছে কালনা মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কও।

বিরল গ্রুপের রক্ত না পাওয়ায় থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর শরীর ক্রমশ খারাপের দিকে এগোতে থাকে। সন্তানকে বাঁচাতে ১ ইউনিট রক্তের জন্য হাসপাতাল ও বিভিন্ন মানুষের কাছে ছুটে গেলেও মেলেনি রক্ত, এই খবর হাসপাতালে কর্মরত বাবার কাছে শোনার পর শিশুকে বাঁচাতে ভয় ভীতিকে পিছনে ফেলে নিজের শরীরের বিরল গ্রুপের রক্তে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মেয়ের এই সিদ্ধান্তে বাধা দেয়নি বাবা, মাথায় চড়া রোদ নিয়ে বাবার সাথে প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে রক্ত দেওয়ার উদ্দেশ্যে হাজির হয় কালনা ব্লাড ব্যাংকে প্রিয়াঙ্কা। রক্ত দিয়ে রুগীকে বাঁচিয়ে খুশি প্রিয়াঙ্কার পরিবার।