সিপাহী বিদ্রোহের সেনার ব্যবহৃত খড়্গ দেবী দূর্গার হাতে

নিজস্ব সংবাদদাতা,উত্তর দিনাজপুর:-▪ সিপাহী বিদ্রোহের সেনার ব্যাবহৃত খড়্গ থাকত দেবী দূর্গার হাতে, এমনই এক দূর্গা পুজো যা বহু বছরের বিদ্রোহের ইতিহাসের স্মৃতিপট নিয়ে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছে রায়গঞ্জ শহরের নীশীথ সরনীর রায়চৌধুরী বাড়ির দূর্গাপুজোয়। এই পুজো শুরু হয়েছিল ১৮৫৭ সালে ঘনশ্যাম কুন্ডুর হাত ধরে। অধুনা বাংলাদেশের হরিপুরে এই পুজোর প্রচলন হয়। তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনের বাংলার বড়লাট ঘনশ্যাম কুন্ডু কে রায়চৌধুরী উপাধি দেওয়ার পর থেকে এই পুজো রায়চৌধুরী বাড়ির পুজো বলে নামাঙ্কিত হয়ে আসছে।

১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হয়ে দেশ ভাগের পর রায়চৌধুরী পরিবার চলে আসে এপার বাংলায় রায়গঞ্জ শহরে। সেইসময় নগেন্দ্রবিহারী রায়চৌধুরী পুজোর ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দূর্গাপুজো চালু করেছিলেন। সিপাহী বিদ্রোহের সেনার ব্যাবহৃত খড়্গ আজও শোভা পায় দেবী দূর্গার একটি হাতে। রায়চৌধুরী পরিবারের বর্তমান বংশধর শিবশঙ্কর রায়চৌধুরী জানান, খুবই নিয়ম নিষ্ঠার সাথে এই পুজো করা হয়ে থাকে। একচালার প্রতিমায় জমিদারি প্রথা মেনে এই পুজোয় আগে নবমীর রাতে বলি দেওয়া হত। কিন্তু এখন বাড়িতে বলির প্রথা তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে বিন্দোল এলাকায় ভৈরবীর মন্দিরে আজও পরিবারের পক্ষ থেকে বলি দেওয়া হয়ে থাকে। আর সব দূর্গামন্ডপে গনেশের পাশেই কলাবৌয়ের অবস্থান হলেও রায়চৌধুরী পরিবারের দূর্গামন্ডপে কার্তিকের পাশে রাখা হয় কলাবৌকে। এছাড়াও এই পুজোয় ভোগে লবন ও হলুদের ব্যবহার চলেনা। বর্তমান রায়চৌধুরী পরিবারের অধিকাংশ সদস্য কর্মসূত্রে বাইরে বসবাস করলেও দূর্গাপুজার সময়ে সকলেই ছুটে আসেন পারিবারিক দূর্গোৎসবে। তবে এবারে রায়চৌধুরী পরিবারের পরিবারেও পড়েছে করোনা আবহের করাল ছায়া। পূজো নিয়ে রাজ্য সরকারের এখনও নির্দেশ তাঁরা হাতে পাননি। করোনা আবহে রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনেই দুর্গোৎসব হবে রায়চৌধুরী পরিবারে। ভক্তদের সমাগম যতটা কম করা যায় সেই ব্যাবস্থা করার পাশাপাশি থাকবে সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলা এবং মাস্ক ও স্যানিটাইজারের ব্যাবহার অবশ্যই রাখা হবে তাদের বাড়ির পুজোয় এমনটাই জানালেন রায়গঞ্জের নীশীথ সরনীর রায়চৌধুরী পরিবারের বর্তমান বংশধর শিবশঙ্কর রায়চৌধুরী।