এই শীতে মুখের স্বাদ পাল্টাতে খেতে পারেন অবাঙালি এই মিঠাইগুলি

স্বাদ

শীত মানেই ভরপেট খাওয়া দাওয়া। শীত মানেই ঘুরতে যাওয়া। আর এই শীতে বাঙ্গালিদের পিঠে পায়েসের সঙ্গে যদি একটু অন্য রকম স্বাদ পাওয়া যায়, তাহলে কেমন হয়। তাই  এই শীতে মুখের স্বাদ পাল্টাতে খেতে পারেন অবাঙালি এই মিঠাইগুলি

গজক
উত্তর ভারতের জনপ্রিয় শীতকালিন মিষ্টি হল গজক। এর আরেক নাম চিক্কি। আর বাংলায় একে বলে গুড় বাদামের তক্তি। নতুন গুড় এবং বাদাম দিয়ে এটি তৈরি করতে হয়। গুড় ভেঙে ছোটো ছোটো টুকরো করতে হয় পাশাপাশি ছাড়িয়ে নিতে হয় রোস্টেড বাদামের খোসা। কড়াইয়ে এক চামচ সাদা তেল গরম করে তাতে গুড়ের টুকরো দিয়ে নাড়তে হবে। তাতে সামান্য জল দিয়ে গুড় একেবারে মসৃণ করে গলিয়ে নিতে হবে। গুড় ফুটতে থাকলে তাতে খোসা ছাড়ানো রোস্টেড বাদাম দিয়ে দিতে হবে। ধীরে ধীরে গুড় বাদাম আঠালো হতে থাকবে। গুড়ের পরিমাণ অনেকটা কমে গেলে গরম অবস্থাতেই সেটি নামিয়ে নিতে হবে। থালা তেল দিয়ে গ্রিজ করে তার উপর গুড় বাদাম ছড়িয়ে উপরে চেপে সমান করে নিতে হবে। গরম অবস্থাতেই সেটির নির্দিষ্ট আকার দিতে হবে। ছুরি দিয়ে কেটে গজকের আকার দিন পছন্দমতো। ঠান্ডা হয়ে গেলে এটি কুড়মুড়ে হয়ে যাবে। কাঁচের বোয়ামে গজক বা গুড়ের তক্তি রেখে দিন। অনেকদিন ভালো থাকবে।

 

গাজরের হালুয়া
আজকাল সারাবছর মিললেও শীতকালে টাটকা গাজরের স্বাদই আলাদা। আর সেই গাজরের হালুয়া আমাদের দেশের সাবেকি মিষ্টি। তৈরি করাও বেশ সহজ। গাজর গ্রেট করে নিন। দুধ ফুটিয়ে ঘন ক্ষীর করে নিন। কড়াইয়ে ঘি গরম করে তাতে গ্রেট করা গাজর দিয়ে হালকা ভেজে নিয়ে তাতে ঘন দুধ দিয়ে দিন। মিশিয়ে দিন চিনি, এলাচ গুঁড়ো, কাজু, কিশমিশ। ঢিমে আঁচে নাড়তে থাকুন। দুধ পুরো শুকিয়ে গেলে হালুয়ার রং সুন্দর কমলা হয়ে উঠবে। দুধের বদলে ব্যবহার করতে পারেন কনডেন্সড্ মিল্ক। সেক্ষেত্রে চিনির পরিমাণ কম দিতে হবে। গরম গরম গাজরের হালুয়া খেতে অসাধারণ লাগে।

 

তিলের লাড্ডু বা নাড়ু
আমরা যাকে তিলের নাড়ু বলি ভারতের অন্যান্য প্রদেশে তাকেই বলে তিলের লাড্ডু। মকর সংক্রান্তি এবং উত্তর ভারতের পরব লোহরির সময় তিলেন লাড্ডু খাওয়ার রীতি আছে। শুকনো কড়াইয়ে তিল ভেজে আলাদা করে তুলে রাখুন। রোস্টেড বাদামের খোসা ছাড়িয়ে আলাদা করে রাখুন। কড়াইয়ে ঘি গরম করে তাতে গুড় দিয়ে নাড়তে থাকুন। তাতে দিন সামান্য জল। গুড় ঘন তরল হয়ে ফুটতে থাকলে তাতে রোস্টেড তিল এবং বাদাম দিয়ে নাড়তে থাকুন। পাক ধরলেই আঁচ বন্ধ করে দিন। নাড়ু গড়তে হয় গরম অবস্থাতেই। তাপমাত্রা বুঝে গরম গরম নাড়ু বা লাড্ডু গড়ে ফেলুন। কাঁচের বয়ামে রাখলে তিলের লাড্ডু অনেক দিন থাকে। শীতকালে তিলের লাড্ডু খেলে শরীর গরম থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

 

গঁদের লাড্ডু
শীতকালে গঁদের লাড্ডু শরীর গরম রাখে। অবাঙালিদের মধ্যে গঁদের লাড্ডু খাওয়ার বেশ চল আছে। কড়াইয়ে গঁদ ভেজে গুড়িয়ে নিতে হয়। তাতে কাজু, কিশমিশ, আমন্ড, পেস্তা, নারকেল, গুড়, এলাচ ইত্যাদি মিশিয়ে লাড্ডু পাকিয়ে নিতে হয়। এই লাড্ডু বেশ পুষ্টিকর।

 

আর ও পড়ুন     হাতির হানায় আহত এক, ভাঙলো দেওয়াল, ঘরের আসবাব

 

পঞ্জিরি
উত্তর ভারতের অত্যন্ত জনপ্রিয় মিষ্টি পঞ্জিরি মূলত শীতকালেই তৈরি করা হয়। কড়াইয়ে ঘি গরম করে তাতে আটা দিয়ে নাড়তে থাকুন। তাতে মেশান গুড় বা চিনি, কাজু, আমন্ড, কিশমিশ, পেস্তা এবং চার মঘজ। খুব ভালো করে নাড়তে থাকুন। অনেকটা সুজির হালুয়ার মতো হয়ে গেলে উনোনের আঁচ বন্ধ করে দিন। গরম গরম পঞ্জিরি খান স্বপরিবারে। এটিও শীতকালে শরীর গরম রাখে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরের পেশিকে সাবলীল করে, এনার্জি বাড়ায়, শরীরের ব্যথা কমায়। গর্ভবতী মহিলাদের পক্ষে এটি বেশ স্বাস্থ্যকর।