মে মাসের মধ্যে পুরভোট করাতে চায় রাজ্য। হাইকোর্টে পুরভোট-মামলায় হলফনামা জমা দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। হলফনামায় কমিশন উল্লেখ করেছে, “মহামারীর হাত থেকে ভোটারদের রক্ষা করতেই দফা ভিত্তিক ভোট। ৬ থেকে ৮ দফায় ভোট চায় রাজ্য। মে মাসের মধ্যে বাকি ভোট চায় রাজ্য।’’ হাইকোর্টে জমা দেওয়া হলফনামায় কমিশন আরও জানিয়েছে, বাকি পুরসভাগুলির ভোট ৬-৮ দফায় করতে চায় কমিশন। নির্বাচন শেষ করতে চায় মে মাসে।
একদিনে সব পুরসভার ফল ঘোষণা নিয়েও আপত্তির কথা জানিয়েছে তারা। কারণ হিসেবে হলফনামায় কমিশনের উল্লেখ তাদের কাছে ১৫৬৮৭ টি EVM আছে। কলকাতার ভোটে ৭২১০ টি EVM ব্যবহার হবে। যদি নির্ধারিত দিন গণনা না হয় তাহলে কমিশনের কাছে ৮৪৭৭ টি EVM পড়ে থাকবে। দফাভিত্তিক গণনা না করলে পরের নির্বাচনের জন্য কমিশনের কাছে EVM-ই থাকবে না। পুরভোট নিয়ে গত সপ্তাহে হাইকোর্টে কড়া প্রশ্নের মুখে পড়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। “কলকাতার নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে গেছে, বাকি নির্বাচন কবে হবে ?” রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চান প্রধান বিচারপতি।
এপ্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি আরও জানতে চান, “ন্যূনতম কত দফায় এই ভোট করা হবে ? আপনারা ইভিএমের সংখ্যা জানিয়েছেন। তাহলে কত দফায় ভোট হবে জানাচ্ছেন না কেন ? বকেয়া ভোটের দিন ঘোষণা কি আপনাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব নয় ?” হাইকোর্টে কমিশন জানায়, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে ভোটের দিন স্থির হয়। আদালতের তরফে রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিয়ে জানাতে বলা হয়েছে, বাকি যে পুরসভাগুলির ভোট বকেয়া রয়েছে, সেখানে তারা কবে ভোট করাতে চায় বা কী পরিকল্পনা রয়েছে। কত দফায় ভোট করাতে চায়।
আর ও পড়ুন জাওয়াদের দুর্যোগের মধ্যেই নৌকা উল্টে দশজন পড়ে গেলেন সুন্দরবনের বেতনী নদীতে
সেই নির্দেশের ভিত্তিতেই আজ হলফনামা পেশ করল কমিশন। এর আগে গত সপ্তাহে কমিশনের তরফে কলকাতা হাইকোর্টে যে হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে যে, সব পুরসভার ভোট একসঙ্গে করাতে গেলে প্রায় ৩০ হাজার ইভিএম প্রয়োজন হবে। কিন্তু, কমিশনের হাতে এই মুহূর্তে ১৫ হাজারের থেকে বেশি কার্যকরী ইভিএম রয়েছে। এখানে হাইকোর্টের বিচারপতি জানতে চান, যখন অর্ধেকের বেশি ইভিএম রয়েছে, তখন দুই দফায় ভোট করাতে অসুবিধা কোথায়?
তার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন হাইকোর্টে কমিশন জানায়, “৬ থেকে ৮ দফায় ভোট চায় রাজ্য।” একাধিক দফায় ভোট করার পক্ষে যুক্তি হিসেবে হাইকোর্টকে কমিশন আরও জানিয়েছে, করোনা মহামারীর জেরে ভোটারদের সুরক্ষার খাতিয়েই দফা ভিত্তিক ভোট করাতে চায় তারা। তবে রাজ্য সরকার যে হলফনামা জমা দিয়েছে, সেখানে বেশ কতগুলি বিষয় এখনও অস্পষ্ট। কারণ,মে মাসে পরীক্ষা থাকে। আবার এখন ওমিক্রনের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এই এই পরিস্থিতিতে মে মাসেই ভোট করানো সম্ভব কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তবে হাইকোর্টে ওই মাসের মধ্যে ভোট করানোর ইচ্ছে প্রকাশ করছে তারা।



















