মহালয়ার দিন তর্পণ করার রীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ রীতি, কি সেই রীতি

জড়িয়ে

মহালয়ার দিন তর্পণ করার রীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ রীতি, কি সেই রীতি।  আজ অর্থাৎ বুধবার (৬ অক্টোবর), মহালয়া। মহালয়া শব্দটির অর্থ, মহান আলয় বা আশ্রম। এক্ষেত্রে দেবী দুর্গাই হলেন, সেই মহান আলয়। এদিন পিতৃপক্ষের অবসান হয়ে, মাতৃপক্ষ শুরু হচ্ছে। এই মহালয়ার গুরুত্ব হিন্দু ধর্মে অনেক। মহালয়ার দিন পিতৃ পুরুষদের উদ্দেশ্যে তর্পণ করার রীতি প্রচালিত আছে।

 

আজই আক্ষরিক অর্থে দুর্গাপুজোর  সূচনা। কথিত আছে মহালয়ার দিন অসুর ও দেবতাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল।পুরাণ থেকে মহাভারত, মহালয়া ঘিরে বর্ণিত আছে নানা কাহিনি। মহালয়ার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আরও এক গুরুত্বপূর্ণ রীতি।

 

এই বিশেষ দিনই দেবীর দুর্গার চক্ষুদান হয়। মনে করা হয়, দুর্গাপুজোর সূচনা হয়, দেবীর চক্ষুদানের মাধ্যমেই। রামায়ণ অনুসারে, রাবণ বসন্ত কালে দেবী দুর্গার পুজো শুরু করেন, যা বর্তমানে বাসন্তী পুজো নামে পরিচিত। শ্রীরামচন্দ্র পরবর্তীকালে শরৎকালে দুর্গাপুজোর আয়োজন করেন, যা অকালবোধন নামে পরিচিত। এরপর থেকেই শারদীয়া দুর্গাপুজো চলে আসছে যুগ যুগ ধরে।

 

আগে রাজবাড়ি কিংবা জমিদার বাড়িতেই দুর্গাপুজো হত। রথের দিন কাঠামো পুজো হত এবং মহাসপ্তমীর দিন নবপত্রিকা প্রবেশের পর দেবীর চক্ষুদান পর্ব হত। যেহেতু মহালয়ার দিন দেবীপক্ষের সূচনা হয়, তাই পরবর্তীকালে মহালয়ার দিনই প্রতিমার চক্ষু আঁকার চল শুরু হয়। চক্ষুদানের পরই প্রতিমায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়।

 

আর ও  পড়ুন    দিনের কোন সময় সেক্স করলে কি হয় ? জেনে রাখুন

 

মহাসপ্তমীর সকালে শুদ্ধাচারে ডান হাতে কুশের অগ্রভাগ নিয়ে দেবী দুর্গাকে কাজল পরানো হয়। প্রথমে ত্রিনয়ন, তারপর বাম চক্ষু ও শেষে ডান চক্ষু আঁকা হয় মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে। পর্দায় ঢাকা ঘেরাটোপে পুরোহিতের উপস্থিতিতে লেলিহান মুদ্রায় মোট ১০৮ বার বীজমন্ত্র জপ করা হয়। এর পরেই মৃন্ময়ী থেকে চিন্ময়ীতে রূপে প্রতিষ্ঠিত হন দুর্গা।

 

তবে শুধু দুর্গার না, তাঁর চার ছেলে মেয়ে – লক্ষ্মী, গণেশ, সরস্বতী ও কার্তিক, এমনকী তাঁদের বাহনদেরও প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। তবে বর্তমানে বারোয়ারি পুজোর সংখ্যা বহুগুণে বেড়েছে। তাই অনেক শিল্পীরা কাজের সুবিধার জন্য মহালয়ার আগেও চক্ষু আঁকেন দুর্গার। তবে একথা বলাই বাহুল্য মহালয়ায় চক্ষুদানের গুরুত্ব হিন্দু ধর্মে অনেক। এদিনেরই পর থেকে ঢাকে কাঠি পড়ে যায় দুর্গাপুজোর।

 

উল্লেখ্য আজ শুভ মহালয়া পিতৃ পক্ষের অবসান,দেবী পক্ষ্যের শুভ সূচনা।দীর্ঘকাল ধরে কোটি কোটি মানুষ মহালয়ার পূন্যপ্রভাতে মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে জল অঞ্জলি দিয়ে স্মরন করে চলেছেন তাঁদের বিদেহী পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে।

 

তবে প্রতিবারের মতো এবছর পিতৃতর্পণের ভীড় সেভাবে দেখা গেলনা নদীর ঘাটগুলিতে। এবার করোনার আবহে কিছুটা হলেও ফিকে হয়ে পড়েছে ঘাটে ঘাটে মহালয়ায় পিতৃতর্পণ। এমনিতেই করোনার কারনে পুজোর গন্ধ অনেকটাই হারিয়ে গেছে।