বাংলাদেশে দুর্গাপুজো ঘিরে অশান্তির অভিযোগ

দুর্গাপুজো

বাংলাদেশে দুর্গাপুজো ঘিরে অশান্তির অভিযোগ ।  বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে অশান্তির খবর মিলেছে। সংবাদ সুত্রে জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের  একাধিক জায়গায় দুর্গামূর্তি ভাঙা কিংবা কালি লেপার কথা জানা গেছে। গোটা ঘটনায়  রীতিমতো থমথমে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বাংলাদেশে।

 

একাধিক সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যায়, বাংলাদেশের  কুমিল্লার নানুয়ার দিঘি এলাকায় পুজো মণ্ডপে হনুমান মূর্তির পায়ের সামনে কোরান রেখে অপবিত্র করা হয়েছে বলেও অভিযোগ। এলাকা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গেলে তাদের দিকে এলোপাথাড়ি পাথর ছোড়া হয়। এরপর কাঁদানে গ্যাস এবং রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এই ঘটনার পর বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় দুর্গাপুজো মণ্ডপে কেউ বা কারা প্রতিমা ভাঙচুর করে যায়।

 

চাঁদপুরের হাজিগঞ্জ, চট্টগ্রামের বাঁশখালি এবং কক্সবাজারের পেকুয়া থেকে এ ধরনের অপ্রীতিকর খবর আসে। বাংলাদেশের একাধিক  সংবাদমাধ্যম  জানিয়েছে, দুর্গাপুজো মণ্ডপে হামলায় মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি সাইন টিভি।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে  র্যাপড  অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে। বাংলাদেশের হিন্দু একতা কাউন্সিলের দাবি, কুমিল্লায় কোরান অপবিত্র করার দাবি ভুয়ো। ভুয়ো প্রচার থেকেই পুজো মণ্ডপে হামলা চালানো হয়েছে। একতা কাউন্সিলের তরফে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে কলঙ্কময় দিন।

 

এদিকে বিষয়টি  নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তসলিমা নাসরিন। তিনি টুইট করে লেখেন, ‘কিছু হিন্দু-বিরোধী গোড়া মুসলিম লুকিয়ে কুমিল্লায় হনুমান মূর্তির পায়ে কোরান রেখে গেছে। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের ছুতো বানিয়ে এটা হিন্দুদের আক্রমণ করার অছিলা মাত্র। আশা করি সরকার সংখ্যালঘুদের বাঁচাবে।

 

অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভায় বিরোধীদলীয় প্রধান ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশের ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের হামলা থেকে ‘সনাতনী জনগণ’কে রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে। বৃহস্পতিবার মোদির কাছে লেখা এক চিঠিতে শুভেন্দু বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় এখন চরম দুরবস্থার মধ্যে রয়েছে।

 

আর ও  পড়ুন  শ্রীভূমির ‘বুর্জ খলিফা’ নিয়ে বিতর্কে সুজিত

 

তিনি বলেন,  ভ্যান্ডাল বা ‘ধংসোন্মাদ’রা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করে প্রতিমা মণ্ডপ এবং মন্দিরে আক্রমণ চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। এসব কারণে বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য এবারের দুর্গা পূজার আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়েছে বলে তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন।

 

শুভেন্দু লিখেছেন, এসব ঘটনার পর বাংলাদেশের হিন্দুদের যেসব আত্মীয়স্বজন পশ্চিমবঙ্গে থাকেন তারা চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। তারা বাংলাদেশের আত্মীয়দের নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে টেলিফোন করে সমর্থন জানাচ্ছেন। বাংলাদেশের হিন্দুরা প্রায়শই উগ্রপন্থী হামলার শিকার হন বলে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি প্রধান তার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।

 

বাংলাদেশে দুর্গা পূজার সময় হামলার ঘটনা নিয়ে যেসব ছবি ও ভিডিও প্রচারিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুত্ববাদীরা সেগুলো ব্যাপকভাবে শেয়ার করছে। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সভাপতি ড. সুকান্ত মজুমদার টুইটারে এক পোস্টে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে মৌলবাদীদের দ্বারা হিন্দুদের উপর হামলা এবং প্রতিমার ভাঙচুর একটি নিন্দনীয় বিষয়, যার আমি তীব্র নিন্দা জানাই।’ তিনি বলেন, ‘সেখানে বসবাসরত সংখ্যালঘু হিন্দুদের সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ সরকারের উচিত কড়া পদক্ষেপ নেওয়া।’