অবশেষে তৃণমূলে যোগ দিলেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দিলেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী বাবুল সুপ্রিয়। এদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়নের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দান করলেন বাবুল সুপ্রিয়। উল্লেখ্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার রদবদলে মন্ত্রিত্ব খোয়ানোর পরই রাজনীতি ছাড়ার ঘোষণা করেন বাবুল সুপ্রিয়। এরপরেও বাবুলকে বোঝানোর চেষ্টা করে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এমনকী, ভবানীপুর উপনির্বাচনে ২০ জন তারকা প্রচারকের তালিকাতেও তাঁর নাম রাখা হয়। যদিও বাবুল সুপ্রিয় জানিয়ে দেন তিনি প্রচার করবেন না। এরপর নানা জল্পনা তৈরি হয়।
শনিবার যার অবসান হল। পাকাপাকি ভাবে তৃণমূলে যোগ দিলেন বাবুল সুপ্রিয়। উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন আগে এমনই একটা শনিবার দুপুরে হঠাত করেই ফেসবুকে বোমা ফাটান বাবুল সুপ্রিয়। আলবিদা…! ফেসবুকে লেখেন তিনি। শুধু তাই নয়, তাঁর পোস্টজুড়ে ছিল রাজনীতি থেকে সরে যাওয়ার বার্তা।
আর ও পড়ুন বাল্যবিবাহকে আইনি মান্যতা দিলো রাজস্থান সরকার !
স্পষ্ট জানিয়ে ছিলেন রাজনীতিতে তিনি আর ফিরবেন না। গান নিয়েই ব্যস্ত থাকবেন। তবে ফেসবুকে দেওয়া কথা রাখতে পারলেন না বাবুল। বাবুল সুপ্রিয়কে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই জল্পনা ছিল। কিন্তু বারবার সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতারা। এমনকি খোদ বাবুলও সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন বহুবার।
এদিন তৃণমূল সাংসদ অভিষেকের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিলেন প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। রাজনৈতিকমহলের মতে, বাবুলকে ছিনিয়ে নেওয়া কার্যত মাস্টারস্ট্রোক তৃণমূলের কাছে। বাবুলের যোগদানের পরেই ডেরেক টুইট করে বলেন, খেলা হবে…!
এর আগে ফেসবুক পোষ্টে বাবুল লিখেছিলেন, ‘বেশ কিছু সময়ে তো থাকলাম’.. কিছু মন রাখলাম কিছু ভাঙলাম.. কোথাও আপনাদের হয়তো আমার কাজে খুশি করলাম, কোথাও নিরাশ হতাশ করলাম | মূল্যায়ন আপনারাই নয় করবেন। বাবুল লেখেন, ‘আমার’ মনে ওঠা সব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার পরই বলছি.. আমার মতো করেই বলছি.. চললাম..! তাঁর এই ফেসবুক পোস্ট ঘিরে শুরু হয় জোর রাজনৈতিক চর্চা।
রাজনৈতিকমহলের মতে, ২৪ এর লক্ষ্যে ঝাপিয়ে পড়েছে তৃণমূল।প্রশান্ত কিশোরের বেঁধে দেওয়া ছকে চলছে তৃণমূল। এই অবস্থায় কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলতে চাইছেন পিকে? প্রথমে মুকুল রায়, এরপর বাবুল সুপ্রিয়কে বিজেপি থেকে ছিনিয়ে নিয়ে সেই বার্তা দিতে চাইছে তৃণমূল। বাবুলের মতো এক নেতাকে তৃণমূলে নেওয়াটাও জাতীয় রাজনীতিতেও একটা বার্তা দেওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বঙ্গ বিজেপিতে মাঝে মধ্যেই দেখা যেত বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে ঝামেলাতে জড়িয়ে পড়তেন বাবুল। প্রকাশ্যে কখনও বাবুলকে নিয়ে তোপ দাগতেন দিলীপ ঘোষ। আবার পাল্টা মন্তব্য দিতেন বাবুলও। কার্যত দুজনের যে সংঘাত চরমে ছিল সে বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। এমনকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পদ বাবুলের চলে যাওয়ার পর একটি ফেসবুক পোস্ট করেছিলেণ বাবুল। তা নিয়েও জোর বিতর্ক তৈরি হয়।
প্রকাশ্যে বাবুলের সমালোচনা করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। তা নিয়েও সংঘাত তৈরি হয়েছিল বাবুলের সঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতির। তবে রাজনৈতিকমহলের মতে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে আসান্সোলের ততকালীন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে দলে নেওয়া নিয়ে সংঘাত তৈরি হয়েছিল। বিরোধীতা করার জন্যে দলের তোপের মুখেও পড়তে হয় বাবুলকে। আর সেই সময় থেকে নাকি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত বাবুল একপ্রকার নিয়ে নেয় বলে সূত্রের খবর।