প্রয়াত হলেন সুভাষ ভৌমিক

সুভাষ

প্রয়াত হলেন সুভাষ ভৌমিক। শনিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ একবালপুরের একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বিশিষ্ট প্রাক্তন ফুটবলার এবং ময়দানের পোড়খাওয়া কোচ। বয়স হয়েছিল ৭৩। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এদিন সকালে ডায়ালিসিস চলাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হন সুভাষ ভৌমিক। দীর্ঘদিন ধরে সুগার এবং কিডনির অসুখে ভুগছিলেন। প্রায় সাড়ে তিন মাস তাঁকে নিয়মিত ডায়ালিসিস নিতে হচ্ছিল।

 

২৩ বছর আগে তাঁর বাইপাস সার্জারি হয়। সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে বুকে সংক্রমণের জন্য ভর্তি ছিলেন একবালপুরের একটি নার্সিংহোমে। শুক্রবার সন্ধেয় শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। শনিবার ভোরে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সুভাষ ভৌমিক।

 

শুক্রবার বিকেলে ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের দফতরে তাঁকে নিয়ে একটি জরুরি সভা ডাকা হয়েছিল। সেখানে তাঁকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল কলকাতার ক্রীড়ামহল। পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছিল কলকাতার তিন প্রধান। কোভিড মুক্ত হলেই তাঁকে মেডিকাতে ভর্তি করার কথাও হয়েছিল। কিন্তু সময় দিলেন না সুভাষ ভৌমিক।

 

১৯৬৯ সালে উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জ থেকে কলকাতায় খেলতে এসেছিলেন সুভাষ ভৌমিক। কলকাতায় তাঁর প্রথম ক্লাব ছিল মোহনবাগান। আর এক স্ট্রাইকার সুকল্যাণ ঘোষদস্তিদারের সঙ্গে মিলে বাংলাকে সন্তোষ ট্রফি জিতিয়েছিলেন। বাংলার ফুটবলে তাঁদের জুটি জোড়া ফলা নামে চিহ্নিত ছিল। দীর্ঘ ফুটবলার জীবনে রাইট আউটে তিনি ছিলেন পাওয়ার হাউস।

 

আর ও পড়ুন     মুম্বইয়ের বহুতলে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড, মৃত ২

 

ময়দানের অন্যতম সেরা ড্রিবলার ছিলেন। প্রচুর গোল করেছেন, করিয়েছেন। সুভাষ ভৌমিক তিন বড় দলে খেললেও ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল নিবিড়। তিনি সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার হয়ে খেলেছেন। ভারতীয় দলের আক্রমণভাগের স্তম্ভ ছিলেন একসময়ে। পিকে ব্যানার্জির অন্যতম শিষ্য ছিলেন সুভাষ ভৌমিক।

 

খেলা ছাড়ার পর কোচিং শুরু করেন। সেখানেও চূড়ান্ত সফল। ২০০৩ সালে তাঁর কোচিংয়ে আশিয়ান কাপ জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। লাল হলুদকে পরপর দুটো জাতীয় লিগ দিয়েছিলেন। তিন প্রধানেই কোচিং করান‌ সুভাষ। এরপর পাড়ি দেন গোয়ায়। সেখানে চার্চিল ব্রাদার্সের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে আই লিগ জেতেন। বরাবরই ময়দানে ফাইটার হিসেবে পরিচিত ছিলেন সুভাষ ভৌমিক। ভাবা হয়েছিল এবারও হয়ত তাঁর লড়াই জিতবে। আবার ফিরে আসবেন প্রিয় ময়দানে। কিন্তু এবার আর তা হল না। হার মানলেন সুভাষ। রেখে গেলেন স্ত্রী, পুত্র এবং পুত্রবধূকে। সুভাষ ভৌমিকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া ময়দানে।