সরকারি চাকরি পাওয়ার লক্ষ্যে Maobadi তকমা পাওয়ার হিড়িক জঙ্গলমহল জুড়ে। একটা সময় ছিল যখন আদালত চত্বরে ভিড় জমাতো মাওবাদী তকমা পাওয়া বা মাওবাদী কাজকর্মে নাম জড়িয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়া ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা জামিন করানোর জন্য।
কিন্তু এখন তো উলোট পুরান!এখন ভোর থেকেই আদালত চত্বরে ভীড় জমছে Maobadi তালিকায় নিজেদের নাম তোলার জন্য। এমনকি আইপিসি র যেকোনো ধারা মাথায় নিয়ে জেলে ঢুকতেও কোনোও সমস্যা নেই অধিকাংশেরই। মেদিনীপুর জেলা আদালত চত্বরে এক আইনজীবীর মুখ থেকে শোনা গেলো এমন কথাগুলিই।
প্রসঙ্গত, একসময় পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম পুরুলিয়া সহ জঙ্গলমহলের বিস্তীর্ণ এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতে মাওবাদীরা যারা অবশ্য জঙ্গলমহল অঞ্চলের মানুষের কাছে বনপার্টি নামেই বেশি পরিচিত ছিল। Maobadi -দের ভয়ে ত্রস্ত হয়ে থাকত গোটা জঙ্গলমহল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চিত্র ধীরে ধীরে পাল্টাতে শুরু করে। কখনো পুলিশি অভিযানের মাধ্যমে কড়া অবস্থান নিয়ে আবার কখনও বিভিন্ন কর্মসূচির এবং প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নয়নের ছোঁয়া দিয়ে জঙ্গলমহল জুড়ে মাওবাদীদের সমাজের মূলস্রোতে ফেরার জন্য সর্বদা চেষ্টা করে গেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
সম্প্রতি আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের জন্য পুলিশের হোমগার্ড পোষ্টে চাকরির ব্যবস্থা করেছে সরকার। এরপরই হঠাৎ করে ভিড় দেখা যায় জেলা আদালত এবং বিভিন্ন থানা চত্বর গুলিতে যুবক-যুবতীদের, যারা নিজেদের মাওবাদী বলে দাবি করেছেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় গেছে ভিড় জমানো জঙ্গলমহলের বাসিন্দাদের অনেকেই শুধুমাত্র সরকারি চাকরির পাওয়ার আশায় নিজেদের মাওবাদী হিসেবে দাবি। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে কোনভাবেই তাদের সাথে মাওবাদীদের কোনো রকম সম্পর্ক নেই।
সম্প্রতি রাজ্য সরকারের তরফে জঙ্গলমহলের ১১০জন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হোমগার্ড পোষ্ট এ নিয়োগের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সরকারের এই উদ্যোগকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক সৃষ্টি হলেও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া মানুষদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরানোর মমতা সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে অধিকাংশই।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে সম্প্রতি নিয়োগ প্রাপ্ত আত্মসমর্পণকারী মাওবাদীদের একটি ট্রেনিংয়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছে ট্রেনিং শেষ হলে তারা তাদের জেলার বিভিন্ন থানায় জেলা এবং পার্শ্ববর্তী জেলার বিভিন্ন থানায় নিয়োগ করা হবে।
আরও পড়ুন- Khela মেলা আর লীলা করেই এই সরকার ১০ বছর কাটিয়েছে, অভিযোগ Dilipঘোষের
জেলা পুলিশের একাধিক অবশ্য স্বীকার করেছেন আত্মসমর্পণকারতে ইচ্ছুক এমন সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।তাদের আবেদনের আবেদনপত্র নেওয়া হয়েছে। সেই তথ্য যাচাই করে তবেই বিবেচনা করা হবে। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে শুধুমাত্র চাকরি পাওয়ার আশায় অনেকেই আবেদন পত্র জমা দিচ্ছেন যাদের সাথে মাওবাদী কার্যকলাপের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক কোন দিনই ছিল না।