করোনা ভাইরাসের কারনে সত্যিই কী পালিয়েছে থাইরয়েড-মাইগ্রেন !

সত্যিই

করোনা ভাইরাসের কারনে সত্যিই কী পালিয়েছে থাইরয়েড-মাইগ্রেন ! লকডাউনে গাড়ি ঘোড়া বন্ধ। প্রকৃতি হাসছে, খেলছে। এমন সময়ে বিষবায়ু নেই। সেই জন্যই কি মানুষকে যে সব রোগ প্রতিদিন জ্বালাতন করত, বিষবায়ু কমে যাওয়ায় সেগুলি কি উবে গিয়েছে? এমনই প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত।

 

যদি সেটাই হয়ে থাকে তাঁর প্রশ্ন কীভাবে এমন হল। আর যদি না হয় তাহলে সেগুলি কোথায় লুকিয়ে? সেই উত্তর দিয়েছেন পরিবেশবিদ নিজেই।  তিনি বলছেন, ‘কোরোনায় নিত্যদিনের রোগগুলো কি গেল হারিয়ে? “ছোট্টো বেলার প্রেম আমার কালো মেম, কোথায় গেলে হারিয়ে”?

 

অঞ্জন দত্তের গানের সুরেই আজ ভাবতে বসেছি – ওরা কি আজ সত্যিই গেলো হারিয়ে? আমারতো অন্ততঃ মনে হচ্ছে তাই। কোরোনা এসে কি ওদের দিল তাড়িয়ে। তাই গেল হারিয়ে?’ তাঁর প্রশ্ন , ‘প্রায় সমস্ত ডাক্তারই চেম্বার বন্ধ করে রেখেছে, বড় হাসপাতালগুলো গেছে বদলে, নার্সিং হোমগুলো রূপান্তরিত হয়েছে বা হচ্ছে, প্যাথলজিগুলো পথ হারিয়েছে। তাই ভাবতেই হচ্ছে যে সাধারণ রোগ ও রোগীরা সব গেল কোথায়?’

 

আক্তু উদাহরণ টেনে তিনি বলেছেন, ‘একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সেদিন বলছিলেন যে তিনি রোজ ২৫টি রোগী দেখেন, তার মধ্যে ৪,৫টি থাকে জটিল বা অত্যন্ত জটিল। লকডাউনের পর আজ পর্যন্ত মাত্র ১৫,২০ জন রোগীর টেলিফোন উনি পেয়েছেন এবং ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন।

 

ওনার ভাবনা কোরোনাকে দেখে কি কোরোনারি পরনারীর কাছে চলে গেল।’ তাঁর সহজ প্রশ্ন, ‘পেটব্যাথা, উচ্চরক্তচাপ, থাইরয়েড, মাইগ্রেন, অর্থোপেডিক বা বহুমূত্র-রোগগ্রস্থরা সব গেল কোথায়? তাদের কি সব কনসেন্টট্রেশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে?

 

কেই বা তাদের হাউস-এ্যারেস্ট করলো? খেয়াল করেছেন কি যে লকডাউন অন্য সমস্ত অসুখ-বিসুখকে একদম নিল-ডাউন করে রেখেছে? কিন্তু কি ভাবে?’    সুভাষ দত্ত বলছেন , ‘বাতাসে বিষ এখন নামমাত্র, তার ওপর বৃষ্টি ওটাকে আরও জব্দ করে দিচ্ছে। যমুনা নাকি হচ্ছে নীলাম্বরী, তার ওপর গঙ্গা তো এখন আর ততটা ভাগের মা নয়। তাই জল ও বায়ু দুটোই হয়েছে স্বাস্থ্য-বর্ধক। তার ওপর হোটেলগুলোও এখন বিষযুক্ত খাবার সরবরাহ করতে পারছে না। বাড়ীর হাল্কা রান্না বাঙালীর মরা পেটে মেডিসিনের মতন কাজ করছে।

 

আর ও  পড়ুন    শরীরে এনার্জি ফিরে পেতে ঘুরে আসুন নির্জন সুন্দরী এই জায়গা থেকে

 

মদ্যপায়ীরা শুনলে ব্যাজার হবেন, মদ কিন্তু হরেকরকম রোগ-ব্যাধী নিয়ে আসে। এতদিন মদের ঝাঁপ ছিল বন্ধ, তাই অসুখ-বিসুখ একটু পথ হারিয়েছিলো। স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতীকারক সিগারগুলো প্রায় দেড়মাস চুমো খেতে পারেনি। আর কি চাই? শুয়ে, বসে, গড়িয়ে ও কিছুটা শরীরের বাড়তি যত্ন নিয়ে বেশ আছি আমরা।’এরপরেই তিনি আসল উত্তরটি দিয়েছেন। জানালেন, ‘রোগব্যাধি কিন্তু সত্যিই পালায়নি। ‘রাতের সব তারাই যেমন থাকে দিনের আলোর গভীরে,’ তেমনি সবসময়েই ওরা বিদ্যবান আমাদের শরীরে। আমরা সযত্নে তা যাচ্ছি এড়িয়ে।

 

রোগ দেহের সাথে সাথে খুব পোক্ত ভাবে বাসা বাঁধে আমাদের মনে। মনের সঙ্গে রোগের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। শরীরে একটু অসুবিধে দেখা দিলেই আমরা অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়ি। নিজের নার্সিংহোম, অর্থাৎ শরীরটাকে শরীরের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা এতটুকুও সময় না দিয়ে ছুটে যাই ডাক্তারের চেম্বারে। বেশীরভাগ রোগই কিন্তু ওষুধ খেলে সাত দিনে, আর না খেলে এক সপ্তাহে সারে। করোনার কারণে এখন আমরা আমাদের নিজ দেহের ডাক্তারবাবু শ্বেত ও লোহিত কণিকার চিকিৎসায় থাকতে বাধ্য হচ্ছি বলেই চিকিৎসা, ডাক্তার ছাড়াই রসে বসে বেশ আছি।’